Google-এর সিংহাসনে কাঁপুনি! Apple আনছে নিজস্ব AI সার্চ ইঞ্জিন, বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার বাঁচাবে টিম কুক
টেক দুনিয়ায় বিশাল পরিবর্তনের ইঙ্গিত! Apple এখন এমন এক সাহসী উদ্যোগের পথে এগোচ্ছে, যা হয়তো Google-এর ২৫ বছরের আধিপত্যকেই চ্যালেঞ্জ জানাবে। কোম্পানিটি তাদের নিজস্ব AI-ভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করছে, যার ফলে Google-এর ওপর তাদের বার্ষিক ২০ বিলিয়ন ডলারের নির্ভরতা কমে আসবে। “AKI টিম” নামের একটি গোপন ইউনিট এই প্রজেক্টের নেতৃত্ব দিচ্ছে – নামটি এসেছে জাপানি শব্দ “আকি” থেকে, যার অর্থ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এই সার্চ ইঞ্জিন চালু হলে, বিশ্বের দুই বিলিয়নেরও বেশি Apple ব্যবহারকারীর তথ্য অনুসন্ধানের পদ্ধতি পুরোপুরি বদলে যাবে।
🔍 Apple-এর গোপন ‘Search Revolution’ : ভিতরে কী ঘটছে?
Apple-এর AI উদ্যোগ খুব একটা নতুন না হলেও, এবার তারা যে লেভেলে গিয়েছে, সেটা একেবারেই নজিরবিহীন। AKI টিমে আছেন ২০২০ সালে কেনা Inductiv Inc.-এর মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ, Voysis-এর প্রাকৃতিক ভাষা বিশ্লেষক, এবং Google-এর প্রাক্তন সার্চ ইঞ্জিনিয়াররা। এই বিশাল মেধার সমন্বয়ে টিমটি দুইটি বড় লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে:
- ✔ কিওয়ার্ড নয়, বরং প্রসঙ্গ বুঝে উত্তর দেওয়া সার্চ ইঞ্জিন তৈরি
- ✔ শুধু লিংক নয়, সরাসরি উত্তর দেওয়া Answer Engine তৈরি
- ✔ Siri-এর সঙ্গে গভীর একীকরণ, যেন কনভার্সেশনাল প্রশ্নে সরাসরি উত্তর মেলে
Apple-এর অফিসিয়াল কেরিয়ার সাইটে (জুলাই ২০২৫) প্রকাশিত “Search Ranking Engineers”-এর চাকরির বিজ্ঞাপন, যেখানে “Generative AI”-এর উল্লেখ আছে, তা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় এই প্রজেক্ট এখন অনেকদূর এগিয়েছে। Financial Times-এর মতে, বর্তমানে iOS-এ মোট সার্চ কুয়েরির ৩০% Apple নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রসেস করছে।
💰 Google মুক্তির পথে : টাকার হিসাবই বলে সব!
Apple-এর এই উদ্যোগ শুধু প্রযুক্তিগত দিক থেকে নয়, আর্থিক দিক থেকেও এক বিশাল বিপ্লব। নিচের টেবিলে দুই পরিস্থিতির তুলনা দেখুন:
কার্যকর দিক | বর্তমান পরিস্থিতি | প্রকল্প সফল হলে |
---|---|---|
Google TAC পেমেন্ট | $20 বিলিয়ন/বছর | $0 |
ইউজার ডেটা নিয়ন্ত্রণ | সীমিত | সম্পূর্ণ |
বিজ্ঞাপন থেকে আয় | প্রায় নেই | $15 বিলিয়ন+ অনুমান |
Bernstein-এর বিশ্লেষক Toni Sacconaghi মন্তব্য করেন, “Intel চিপ বাদ দেওয়ার পর Apple যে লেভেলের স্ট্র্যাটেজিক পরিবর্তন এনেছে, এটাও তেমনই একটি বড় পদক্ষেপ। তারা তাদের হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার ইকোসিস্টেমকে এমনভাবে ব্যবহার করছে, যা অন্য কেউ করতে পারছে না।” (MarketWatch, জুন ২০২৫)
🧠 টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জ বনাম Apple-এর সুবিধা
Google-এর সার্চ ইঞ্জিনকে প্রতিযোগিতা দেওয়া কোনো সহজ কাজ নয়। কিছু বড় চ্যালেঞ্জ:
- 📌 স্কেল: Google প্রতিদিন ৮.৫ বিলিয়ন সার্চ প্রসেস করে, এবং ১৩০ ট্রিলিয়ন পেজ ইনডেক্সে রয়েছে।
- 📌 রিয়েল-টাইম রেজাল্ট: AI-এর “hallucination” (ভুল তথ্য তৈরি) এখনো একটি সমস্যা।
- 📌 আইনগত বাধা: EU ইতিমধ্যে অ্যান্টিট্রাস্ট ইস্যুতে Apple-এর প্রাথমিক শুনানি শুরু করেছে।
তবুও, Apple-এর কিছু স্পষ্ট সুবিধা আছে:
- 🔒 প্রাইভেসি-কেন্দ্রিক ডিজাইন, যা ইউজারের ডিভাইসেই সব প্রসেস করে
- 📅 Mail, Messages, Calendar-এর মতো অ্যাপে সার্চের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিকতা অনেক বাড়বে
- ⚡ ইন্টারনাল টেস্টে দেখা গেছে, লোকাল সার্চ রেজাল্ট ৪০% দ্রুত আসছে
You also like: স্যামসাং গ্যালাক্সি S25 FE: কবে আসছে বাজারে? ডিজাইন ফাঁস ও দাম নিয়ে ফাঁস হল বড় তথ্য!
🗓 কবে আসছে Apple-এর নতুন সার্চ ইঞ্জিন?
বিশ্বের বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, iOS 26 -এ কিছু সীমিত অঞ্চলে এই নতুন সার্চ ইঞ্জিনের টেস্ট শুরু হতে পারে ২০২৬ সালে। আর ২০২৭ নাগাদ Safari এবং Siri-তে সম্পূর্ণভাবে এটি ইন্টিগ্রেট করা হবে। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের “Digital Markets Act” অনুযায়ী কিছু আইনগত বাধায় প্রকল্পের রোলআউটে দেরি হতে পারে।
🤔 Google কি তাহলে পিছিয়ে পড়বে?
প্রযুক্তিগতভাবে, Apple অনেক আগেই Spotlight ও Siri-এর মাধ্যমে নিজস্ব সার্চ পরিচালনা করছে। আর্থিক দিক দিয়ে, Google-এর সঙ্গে $20 বিলিয়নের চুক্তি বাতিল করাই যুক্তিযুক্ত মনে করছে Apple। মূল চ্যালেঞ্জ হলো, Google-এর মতো ব্যাপক তথ্যভাণ্ডার ও সব ধরণের obscure (অপরিচিত) প্রশ্নের উত্তর কীভাবে Apple দিবে? সেইসাথে, তাদের নিজস্ব প্রাইভেসি নীতিও ঠিক রাখতে হবে।
📌 Must Know: আপনার জানা জরুরি কিছু তথ্য
✅ Apple-এর AKI টিম কী?
AI এবং সার্চ টেকনোলজি বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি AKI টিমে আছেন ১৫০ জনের বেশি মানুষ। এদের অনেকেই Google, Amazon Alexa এবং বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ প্রোগ্রাম থেকে আসা। টিমটি সরাসরি Apple-এর AI প্রধান John Giannandrea-এর অধীনে কাজ করে।
✅ Google-এর চেয়ে Apple সার্চ ইঞ্জিন কীভাবে আলাদা হবে?
Google যেখানে ওয়েব-ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করে, Apple-এর সার্চ প্রযুক্তি ইউজারের ডিভাইসের তথ্য (ইমেইল, মেসেজ, অ্যাপ) বিশ্লেষণ করে সরাসরি উত্তর দিবে। সব প্রসেস হবে ডিভাইসেই, যাতে ইউজারের প্রাইভেসি অক্ষুন্ন থাকে।
✅ Apple-এর সার্চ কবে চালু হবে?
২০২৬ সালে সীমিত টেস্ট, আর পূর্ণাঙ্গ রোলআউট ২০২৭ সালে। তবে আইনগত বিষয়গুলোর কারণে কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে।
✅ Apple কি সত্যিই Google সার্চ-এর বিকল্প হয়ে উঠবে?
কারিগরি দিক দিয়ে সম্ভব, কারণ Apple ইতিমধ্যে Spotlight এবং Siri ব্যবহারে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। অর্থনৈতিকভাবে, এই সিদ্ধান্তে তারা বিশাল টাকা সাশ্রয় করবে। কিন্তু Google-এর মতো বিশাল ডেটাবেস এবং নির্ভুলতা পাওয়া এখনো একটি চ্যালেঞ্জ।
📢 শেষ কথা: Apple কি সত্যিই Google-কে টপকে যাবে?
Apple-এর এই উদ্যোগ শুধু একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি নয় – এটি প্রযুক্তির ইতিহাসে এক বড় বাঁক। যদি সফল হয়, তাহলে এটি হতে পারে সবচেয়ে প্রাইভেসি-সচেতন ও ইউজার-কেন্দ্রিক সার্চ অভিজ্ঞতা। আর Apple-এর মতো প্রতিষ্ঠান যেহেতু একযোগে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাই তাদের এই প্রচেষ্টা Google-এর জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা – আপনার পরবর্তী iPhone সার্চ হয়তো ইতিহাস গড়বে!