মেয়র হতে না পেরে দখলকৃত টিভি দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন ইশরাক: উপদেষ্টা আসিফ

ইশরাক টিভি দখল করে চালাচ্ছেন প্রোপাগান্ডা? সরাসরি অভিযোগ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার!

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে না পারার হতাশা থেকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন এখন টিভি চ্যানেল ব্যবহার করে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন — এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

 

মেয়র হতে না পেরে দখলকৃত টিভি দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন ইশরাক: উপদেষ্টা আসিফ

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া একটি পোস্টে এই অভিযোগ করেন তিনি। পোস্টে সরাসরি ইশরাক এবং কুমিল্লার সাবেক এমপি কায়কোবাদের দিকে আঙুল তোলেন আসিফ মাহমুদ।

তিনি বলেন, “মেয়র হিসেবে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর কোর্টের মারপ্যাঁচ ও সরকারি সিদ্ধান্তে মেয়র হতে না পেরে ইশরাক ভাই কায়কোবাদ সাহেবের সঙ্গে জোট বেঁধে, তার দখল করা টিভি দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানোতে নেমেছেন।”

পোস্টে তিনি দাবি করেন, মুরাদনগরের আলোচিত ট্রিপল মার্ডার কেসেও তার নাম জড়াতে চেষ্টার পেছনে একই চক্র কাজ করছে। তিনি লেখেন, “ওই ঘটনার মূল হোতা শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সাহেবের ভাই শাহ জুন্নুন বুশরী। এমনকি এই খুনের পর তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আনন্দ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে। অথচ আমি বা আমার পরিবার গত তিন মাসে এলাকায় যাইনি।”

আসিফ মাহমুদের ভাষ্য অনুযায়ী, নিহতদের প্রথমদিকের কোনো বক্তব্যে তার নাম ছিল না, কিন্তু “কায়কোবাদ সাহেবের লোকেরা তাকে কনভিন্স করে এক মাস পর তার মুখে এসব বলাচ্ছে।”

তিনি দাবি করেন, কায়কোবাদ পরিবার নাকি ভয় পাচ্ছে, তিনি মুরাদনগরে আগামী সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। “এই এক অজানা আশঙ্কা থেকেই তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে,” বলেন তিনি। তবে স্পষ্ট করে দেন, “এমপি হবার কোনো খায়েশ আমার নেই। শুধু মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি।”

পোস্টে তিনি নিজের অসহায়ত্বও প্রকাশ করেন, বলেন, “একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে, যার নেই কোনো এস্টাবলিশমেন্ট ব্যাকআপ, নেই ফাইনানশিয়াল সাপোর্ট — সে যখন মাফিয়াদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন তাকে ভিলেন বানিয়ে দেওয়া হয়।”

সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অংশ ছিল মিডিয়াকে ঘিরে তার বক্তব্য। তিনি বলেন, “মিডিয়া দখলে থাকলে কী না করা যায়? থানা ভাঙচুর করা, খুনের আসামিদের ভিকটিম বানানো, সবই সম্ভব।”

You also Like: ৪৪তম বিসিএসের প্রার্থীদের জন্য পিএসসির জরুরি নির্দেশনা

এই পোস্টের নিচে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও মন্তব্য করেন, “বাংলাভিশন চালায় বিএনপির ইশরাক ভাই।” তিনি অভিযোগ করেন, “এই চ্যানেল এখন পেশাদারিত্ব হারিয়ে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।” তিনি আরও হুঁশিয়ার করেন, “৭১ কিংবা ২৪-এর অভ্যুত্থানের আগে যেসব চ্যানেল বিভ্রান্তিকর ভূমিকা রেখেছিল, বাংলাভিশন যদি ২৪-এর পরও একই কাজ করে, তবে সাধারণ মানুষ এমন চ্যানেল বয়কট করবে।”

সব মিলিয়ে, একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বড়সড় রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইশরাক হোসেন বা বাংলাভিশনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তবে উপদেষ্টার এ ধরনের অভিযোগ এবং টিভি দখলের মতো সংবেদনশীল ইস্যু সামনে আসায়, আগামী দিনে এটি আরও বড় রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ নিতে পারে — এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *